• রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:০১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
যাচাই-বাছাইয়ে আটকে গেল রাঙ্গার মনোনর্য়ন কবি ফররুখ স্মৃতি পুরস্কারে ভূষিত কথাসাহিত্যিক বুলবুল সরওয়ার সিরাজগঞ্জে দরিদ্র চক্ষু রোগীদের বিনামূল্যে চক্ষু ক্যাম অনুষ্ঠিত বাবার স্বপ্নপূরণে জনপ্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা করে আসছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বেপারী কাজিপুরে সাবেক মেয়র ও প্যানেল মেয়রকে মারপিটের ঘটনায় বহিস্কার দুই ধামরাই স্লোটেক্স গার্মেন্টস শ্রমিকে পিটিয়ে হাসপাতালে ভর্তি বগুড়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে অপহরণ করলেন আওয়ামীলীগ নেতারা কাজিপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন সংসদ সদস্য জয় গোপালগঞ্জ-৩ আসনে শেখ হাসিনার মনোনয়নপত্র দাখিল

নওগাঁর সাপাহার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ

রিপোর্টারঃ / ২৭০ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত হয়েছেঃ রবিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৩

নওগাঁ প্রতিনিধি :
জাল দলিল করে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার খেরুন্দা ও তাজপুর মৌজায় একটি পরিবারের ২১ একর জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ভূমি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে একটি চক্র জাল দলিল করে জমি দখলের চেষ্টা করছে। সাপাহার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেন ওই চক্রের মূলে রয়েছে।
রোববার বিকেলে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিবদমান জমির একটি অংশের মালিকানা দাবি করে মাসিরা চৌধুরী নামে এক নারী সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাসিরা চৌধুরী বলেন, তিনি পরিবার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকেন। নওগাঁর সাপাহার উপজেলার খেরুন্দা ফুটকইল গ্রামে তাঁর বাবার বাড়ি। তাঁর বাবা মকসুদাল হক চৌধুরী মারা যাওয়ার সময় ২২ একর সম্পত্তি রেখে যান। বড় বোন মুনিরা চৌধুরী কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। তাঁদের বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তির ওয়ারিশ তিনি ও তাঁর বড় বোনসহ তাঁর বড় ভাই মাকসুমুল হক চৌধুরী ও ও মা মৃত নার্গিস মুর্শিদা। বাবার রেখে যাওয়া বাড়ী, আবাদি জমি, পুকুরসহ অন্যান্য সম্পত্তির কোনো বাটোয়ারা দলিল হয়নি। বড় ভাই মাকসুমুল হক তাঁর দুই বোন ও মায়ের স্বাক্ষর জাল করে ২০১৮ সালে তৎকালীন ভূমি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জাল হেবানামা বা দানপত্র দলিল করে ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ লিখে নেন। জাল হেবানামা দলিল সূত্রে মাসিরা ও তাঁর বোনকে বঞ্চিত করে মাকসুমুল হক জুলফিকার আলী নামে এক ব্যক্তির কাছে বায়না দলিল করে নেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানতে পেরে ২০২০ সালে ৯ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলার শুনানি নিয়ে আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশকে নির্দেশন দেন। সিআইডির তদন্তে জাল হেবানামার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর সিআইডি পুলিশের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর শরীফ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে আদালত মাকসুমুল হক, জমির বায়না দলিল গ্রহীতা জুলফিকার আলীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর তৎকালীন সাপাহারের সাব-রেজিস্টার মুক্তি আরা খাতুনের যোগসাজশে জাল হেবানামা দলিল করা ১০ একর সম্পত্তিসহ ২১ একর সম্পত্তি তাঁর ভাইয়ের কাছ থেকে ছয়টি বিক্রয় দলিল ও একটি বায়না দলিল রেজিস্ট্রি সম্পাদন করেন। জমি ক্রেতাদের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেনসহ ১৯ জন ব্যক্তি রয়েছে। উপজেলার তাজপুর ও খেরুন্দা মৌজায় থাকা বিবদমান ২১ একর সম্পত্তির ওপর বর্তমানে হাইকোর্টের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও নিম্ন আদালতের ১৪৪ জারি রয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জমি দখলকারী এই চক্রের মূলে রয়েছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজের নামে নেওয়া ৩৩ শতক কৃষি জমি সাব-রেজিস্ট্র ও বসতবাড়ির ৩৩ শতক জমি বায়না দলিল করে নেওয়া ছাড়া বাকি দলিলগুলোতে তিনি ১ নম্বর সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন। স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, জুলফিকারসহ অন্য আরও ১৭ ব্যক্তির নামে যেসব জমি কিনেছেন তাঁরা সবাই শাহজাহান হোসেনের লোক। ওই সব ব্যক্তির নামে জমি দখল করে নিয়ে পরবর্তীতে ওই সব দখল করবেন শাহজাহান। বেশ কিছু দিন ধরে তাঁর লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা খেরুন্দা ও তাজপুর মৌজায় পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মাকসুমুল হক চৌধুরী বলেন, ‘১৯৮৩ সালে বাবা আমার ও মায়ের নামে হেবা দলিল করে দিয়ে গেছেন। বাকি যেসব জমি আছে সেগুলো সম্পত্তি বাটোয়ারা হয়ে গেছে। জাল হেবা দলিল করার অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার বড় বোন কয়েক দিন আগে সাপাহারে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কাছে গিয়ে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন।’
জানতে চাইলে অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেন বলেন, ‘আমি যে জমি কেনার জন্য বায়না করেছি এবং অন্যরা মাকসুমুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে যেসব জমি কিনেছেন সেগুলো নিষ্কণ্ঠক জেনেই আমরা কিনেছি। জমি নিয়ে বিতর্ক থাকলে কি ভূমি কর্মকর্তারা রেজিস্ট্রি করে দিতেন? আমি অন্যায় প্রক্রিয়ায় জমি কিনে নাই কিংবা দখলের চেষ্টা করি নাই। বরং মাসিরা চৌধুরী আমাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে জমির দখল নিতে বাধার সৃষ্টি করছেন। আইনিভাবেই আমরা সেসব মামলা মোকাবিলা করব।’

এ/হ


এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন