রংপুর বিভাগীয় ব্যুরো :
শুধু নিত্যপণ্য নয় গবাদি পশুর খাদ্য ক্রয় করতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। চাইরটা গরু আছিল। তিনটা ব্যাছে ফ্যালে এ্যালা খালি একটা গরু আছে। কি করমো খাদ্যের দাম বেশি। হামার আর গরু পুষা হবার নয়। এসব কথা বলেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া মাসিমপুরের ক্ষুদ্র খামারি রাজিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, স্বামী ক্ষুদ্র শুঁটকি ব্যবসায়ী।
২ মেয়ে আর ১ ছেলে নিয়ে ৫ সদস্যের পরিবার। বড় মেয়েটা নবম শ্রেণিতে উঠেছে। স্কুলে ১ রোল হয়েছে। আরেক মেয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী আর ছেলেটা মানসিক প্রতিবন্ধী। গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে বাধ্য হয়ে খামারের ৪টি গরুর মধ্যে ৩টি বিক্রয় করেছে তিনি। মেয়ের ভালো ফল খুশির বার্তা নিয়ে এলেও সংসারে অভাব ও অনটনের কারণে চোখেমুখে অন্ধকার দেখছেন নারী খামারি। স্বামী নয়া মিয়া বাজারে খোলা আকাশের নিচে বসে শুঁটকি বিক্রয় করে যতটুকু আয় করেন তা দিয়ে সংসার চলে না। এনজিও থেকে ঋণের টাকা তুলে দু’টি গরু ক্রয় পালন শুরু করেন রাজিয়া। ওই দু’টি গরুর বাছুর হলে বাড়ির একটি ছোট্ট ঘরে গড়ে তোলেন খামার। মধ্যে ২টি গাভীর দুধ বিক্রয় করে সংসারের খরচ নির্বাহ করেন রাজিয়া। তবে গো-খাদ্যের চড়া দামে রাজিয়া সুলতানার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। দ্রব্যমূলের দাম তো বাড়ছেই, সেই সঙ্গে দফায় দফায় গো- খাদ্যের দাম বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে ক্ষুদ্র খামারিরা। লোকসান হওয়ার কারণে অনেকেই খামার বন্ধ দিয়েছে। উপজেলার মামুদপুর গ্রামের গরুর খামারি শাহিন মিয়া বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়লে তো আর কমে না। খাদ্যের দাম বাড়ে আর বাড়ে। দুধ আর গরুর দাম তো ঠিক আগের মতোই আছে। এভাবে গরু পালন করা যাচ্ছে না, লোকসান হচ্ছে। মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডা. একরামুল হক মন্ডল বলেন, উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ১৫শত গরুর খামার রয়েছে। খামারিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, এ জন্য খামারিদের ঘাস চাষের পরামর্শ দিচ্ছি। গরুকে পর্যাপ্ত সবুজ ঘাস খাওয়াতে পারলে কেনা খাবারের উপর চাপ অনেকটাই কমবে।
এ/হ