উজ্জল মিয়া, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরশহরের কালীবাড়ী বাজারে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট অগ্নিকান্ডে ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সর্বস্ব ভস্মিভূত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য রাতের ন্যায় বৃহস্পতিবার রাতে শহরের কালীবাড়ী বাজারের চাউল পট্টিসহ লাগোয়া ওইসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিদিনের ন্যায় বন্ধ করে বাড়ি চলে যায়। এদিকে রাত শেষে শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোররাতে কোন-না-কোন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ সঞ্চালন তার থেকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট ঘটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে মূহুর্ত্বের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা একের পর এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ওইসব প্রতিষ্ঠানের মজুদ মালামাল, নগদ অর্থ আগুনে ভস্মিভূত হয়। অপূরণীয় ক্ষতির কবলে ব্যবসায়ীরা প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
খবর পেয়ে পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা জেলা শহর এবং গোবিন্দগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের পৃথক ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এসময় টানা প্রায় ৩ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু ততক্ষণে সবকিছু পুড়ে ভস্মিভূত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে আল-আমিন চালের আড়ৎ, আলম ক্রোকারিজ, আল-আমিন কাঁচামালের গুদাম, রঞ্জুর ওষুধের দোকান, ছামছুল মিয়ার কাপড় দোকান, সুজনের কাপড়ের দোকান, মেসার্স মুবিন হার্ডওয়্যার, জোব্বার মিয়ার বাদাম-চানাচুরের প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো পুড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা একেবারে পথে বসেছে। এসময় প্রতিষ্ঠান মালিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্রন্দন-আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে আসে।
জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রায় সকলেই স্থানীয় ব্যাংক, অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। একদিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত অপরদিকে গৃহীত ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তারা এখন চোখে সরষে ফুল দেখছেন। ভবিষ্যত করণীয় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এখন পাগল প্রায়। সরকারি, বে-সরকারি সহায়তা, সাহায্য ও সহযোগিতাসহ প্রয়োজনীয় সহানুভূতি পেতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা উপজেলা ও জেলা প্রশাসন, মানবিক দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের জন-প্রতিনিধিদের মানবিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান নয়ন, থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মাসুদ রানা, জেলা পরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান ফুল মিয়া ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলীয় নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় ওইসব নেতৃবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সম্ভাব্য সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাসের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
পলাশবাড়ী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ইনচার্জ মুহাম্মদ মশিউর রহমান জানান, অগ্নিকান্ডের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এমুহূর্তে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ এমুহূর্তে নিরূপন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ সম্ভব হবে। প্রসঙ্গতঃ ব্যবসায়ী ছাড়াও স্থানীয় সচেতন মহলের ধারনা অন্ততঃ ২ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।