উল্লাপাড়ায় সড়ক যোগাযোগ ক্ষেত্রে নব দিগন্তের সূচনা, গ্রাম জনপদে উন্নয়নের ছোঁয়া
রিপোর্টারঃ
/ ১৯৫
বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত হয়েছেঃ
বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২
আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে এই পোস্টটি শেয়ার করুন
আনোয়ার হোসেন চলনবিল প্রতিনিধি :
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় গত ৮ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ৪শ’৩০ কিলোমিটার বিভিন্ন ধরনের নতুন পাকা সড়ক নিমার্ণ করেছে। এতে ব্যায় হয়েছে ২শ’৫০ কোটি টাকা। এসব সড়ক নিমার্ণের কারণে উপজেলার গ্রাম জনপদে দীর্ঘদিনের দূভোর্গ যেমন দুর হয়েছে। তেমনি মানুষের সহজ যাতায়েত নিশ্চিত সহ গ্রামে মিলছে শহরের সুযোগ সুবিধা। গ্রামীণ অর্থনীতি হয়েছে গতিশীল শক্তিশালী। উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের জঙ্গলখামার। বৃহৎ এই গ্রামটির সিংহভাগ ভাগ মানুষ কৃষি পেশার সাথে জড়িত। ফসল চাষাবাদ আর গো-খামার করে জিবীকা নিবার্হ করে বেশিরভাগ মানুষ। এই গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও রয়েছে। গ্রামটির চলাচলের একমাত্র মাটির সড়কটি যুগের পর যুগ ধরে বিপর্যস্ত ছিল। দুই পাশে ভেঙ্গে সরু হালটে পরিনত হয়েছিল। এমন অবস্থায় যানবাহন চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। সামান্য ঝর-বৃষ্টিতে পুরো সড়কে কাঁদা হয়ে যেত। দীর্ঘদিন এমন সমস্যর কারনে গ্রামের কৃষকরা কোন মালামাল আনতে পারতো তা। ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে কষ্ট পোহাতো। চলতি বছর প্রায় ১ কিলোমিটার সড়টি পাকা করন করা হয়েছে। এত দুর হযেছে গ্রামটির দুই হাজার মানুষের দীর্ঘদিনের সব দূভোর্গের। এখন চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন। এই গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী মো.মতিন মিয়া জানান,আমি প্রতিদিন গ্রামের খামারীদের কয়েক মন গরুর দুধ সংগ্রহ করে মিলে বিক্রি করি। রাস্তাটি এমন খারাপ ছিল যে দুধ সংগ্রহ করে তা ভ্যান ঠেলে নিয়ে যাওয়া কষ্ট কর ছিল। এখন সড়কটি পাঁকা করায় খুব ভাল হয়েছে। দুধ সংগ্রহ কওে নিশ্চতে মিল কারখানায় নিয়ে বিক্রি করতে পারছি। কোন সমস্য হচ্ছে না। একই গ্রামের কৃষক ছলিমউদ্দিন জানান,সড়কটি খারাপ থাকায় আমারা মাঠের ফসল বাড়িতে আনতে পারতাম না। ফসল বিক্রির জন্য হাট-বাজারে নিতে পারতাম না। সার- বীজ আনতে পারতাম না। এখন পাকা হবার পর আমাদের সেই দুঃখ দুর হইছে। আমরা সব সময় মালামাল নিয়ে আসা যাওয়া করতে পারতেছি। একই গ্রামের আব্দুল হক জানান,রাস্তা পাকা হওয়াতে আমি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা নিয়ে সব সময় যাত্রী নিয়ে আসা যাওয়া করেত পারছি। এখন সব মানুষের যাতায়েত খুব সহজ হেছে। একইভাবে উল্লাপাড়া উপজেলার ১৪টি ইউয়িনে গত ৮ বছরে প্রতিটি কাঁচা রাস্তার তালিকা তৈরি করে এগুলো পাকা করন করা হয়েছে। বিশেষ করে এ উপজেলার চলনিবিল অধ্যুষিত পশ্চিমাঞ্চলের বন্যা কবলিত উধুনিয়া,বড়পাঙ্গাসী,মোহনপুর,বাঙ্গালা ইউনিয়নের ফসলের মাঠের ভিতর দিয়ে ডুবো সড়ক (সাবমার্জিবল) নিমার্ণ করা হয়েছে। এতে বদলে গেছে গ্রাম জনপদের চিত্র। প্রতিটি গ্রামেই পাকা সড়ক নিমার্ণ করায় কৃষকরা তাদেও উৎপাদিত ফসল হাট বাজারে বিক্রি,সার-বীজ আনা নেয়া,দুগ্ধ বিক্রি সহ যে কোন মালামাল আনা নেয়া করতে পারছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় কৃষকরা উৎপাদিত পণ্যর সঠিক দাম পাচ্ছে। রাস্তা পাকা হওয়ায় গ্রামের বাজারেই সব ধরনের পণ্য কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। দিন রাত গ্রাম থেকে যানবাহনে চড়ে দেশের যে কোন প্রান্তে আসা যাওয়া যাচ্ছে । ছেলে মেয়েরা শহরের স্কুল কলেজে আসা যাওয়া করতে পারছে। এমন সুবিধার কথা উপজেলার প্রত্যন্ত এলকার মানুষ কোনদিন চিন্তাও করতে পারতো না। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের কারনে এখন শক্তিশালী ও গতিশীল হয়েছে এ উপজেলার গ্রামীণ অর্থনীতি। উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো.আবু সায়েদ দৈনিক সংবাদকে জানান,গত ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত, উল্লাপাড়া উপজেলায় জাতীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের সার্বিক সহযোগীতায় ৪শ’৩০ কিলোমিটার নতুন গ্রামীণ সড়ক পাকা করা হয়েছে। এতে ব্যায় হয়েছে প্রায় ২শ’৫০ কোটি টাকা। আরো অনেক গ্রামীণ রাস্তা পাকা করনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো শেষ হলে এ উপজেলার পুরো চিত্র পাল্টে যাবে। উল্লাপাড়া-সলঙ্গা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম জানান, উল্লাপাড়া উপজেলাকে দেশের মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলেতে কাজ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রাম কে শহরে রুপ দিতে উপজেলার সব গ্রামের রাস্তা ঘাট,ব্রীজ-কালভার্ট উন্নয়নের জন্য আমরা তালিকা করে কাজ করছি। ইতিমধ্যে যেসব এলাকার রাস্তা পাকা করা হয়েছে সেসব এলাকার মানুষ সুবিধা ভোগ করছে। এ উপজেলার মানুষের জীবন যাত্রায় পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে।